কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা বা কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আপনি কি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আজ এই পোস্টে কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানাবো। আপনি যদি কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কাঁচা হলুদ খাওয়ার নিয়ম জানতে চান তাহলে নিচে পড়ুন।
যদিও হলুদ বেশিরভাগ লোকের জন্য নিরাপদ যখন চা বা খাবারের সাথে খাওয়া হয় কিন্তু কাঁচা হলুদ কেউ যদি খুব বেশি পরিমাণ খায় তাহলে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন আপনার অ্যালার্জি থাকলে এটি খেলে ফুসকুড়ি, ডায়রিয়া বা পেটে ব্যথা হতে পারে। তবে আমাদের আলোচনা বিষয় হল কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা। তাহলে কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
সূচিপত্রঃ কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা
- প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়া কি নিরাপদ?
- কাঁচা হলুদের উপকারিতা কি কি?
- কাঁচা হলুদের পুষ্টিগুণ
- কাঁচা হলুদের অপকারিতা
- শেষ কথা
প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়া কি নিরাপদ?
হলুদ একটি মশলা জাতীয় উপাদান হিসেবে তরকারিতে ব্যবহার হয়। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে এটা খুব উপকারি বলে জানা যায়। স্বাভাবিক পরিমাণে কাঁচা হলুদ খেলে সেরকম কোনো সমস্যা হবে
হলুদের খুব বেশি মাত্রা দীর্ঘ সময় ধরে খাওয়া হলে তা শরীরের ক্ষতি করতে পারে। একজন ব্যক্তি যিনি বেশি পরিমাণে হলুদ খান (দিনে দুবার 1500 মিলিগ্রামের বেশি) তার জন্য বিপজ্জনক সমস্যা হতে পারে। আবার যাদের রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা আছে তারা যদি এর ওষুধ খায় তাহলে সেই সময়ে হলুদ খাওয়া নিরাপদ নয়। এরকম অনেক সমস্যা থাকতে পারে এ জন্য কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা নিচে আমরা আলোচনা করবো।
কাঁচা হলুদের উপকারিতা কি কি?
কাঁচা হলুদ এর ঔষুধী বৈশিষ্ট্যের জন্য দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। যদিও কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটাই আছে কিন্তু হলুদের উপকারিতাই অনেক বেশি।
অস্টিওআর্থারাইটিস ঠিক করতেঃ অস্টিওআর্থারাইটিস আছে এমন ব্যক্তিদের যে ব্যথা এবং ফোলাভাব থাকে তা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যায় যে কাঁচা হলুদ অস্টিওআর্থারাইটিস রোগীদের ভালো রাখতে এবং রোগের লক্ষণগুলি কম করতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ কাঁচা হলুদ খারাপ বা কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (এলডিএল) কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডস এবং শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
মানসিক চাপ কমাতেঃ হলুদ মানসিক সমস্যা যেমন বিষণ্নতা, চিন্তা এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। ডাক্তারের নির্দেশিত ওষুধের সাথে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য রয়েছেঃ কিছু গবেষণায় দেখা যায় যে হলুদের ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, বিশেষ করে স্তন, অন্ত্র, পাকস্থলী এবং ত্বকের ক্যান্সার। ক্যান্সার এর কোষ মেরে ফেলতে কাঁচা হলুদ খুব কার্যকরী।
সর্দি বা কাশিঃ হলুদ অ্যালার্জি গুলো অনেক ভালো করে অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে বা আরাম দেয়, যেমন চুলকানি, হাঁচি এবং নাক দিয়ে পানি পড়া বা জ্বর। এই সমস্যা গুলো বেশিরভাগ সময় অ্যালার্জির কারণে হয়ে থাকে।
আমরা জানি কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় রয়েছে। নিচে কাঁচা হলুদের আরো কিছু উপকারিতা হলঃ
- চোখের রোগ, যেমন ইউভাইটিস থেকে আরাম পাওয়া যায়
- আলঝেইমার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
- কোলোরেক্টাল ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং ফুসফুসের ক্যান্সার এর চিকিৎসায় ব্যবহার হয়
- প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ থেকে আরাম পাওয়া যায়
- ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে
- ব্রণ ও মাড়ির রোগ এর ঝুঁকি কমায়
- দাদ সহ ছত্রাকের সংক্রমণ কমায়
কাঁচা হলুদের পুষ্টিগুণ
কাঁচা হলুদ হল পটাসিয়াম, ভিটামিন বি৬, এবং ফাইবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন সি-এর একটি চমৎকার উৎস। হলুদের প্রধান উপাদান হল কারকিউমিন এই উপাদান অনেক উপকার করে যেমন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, সর্দি কাশি কমায় এবং এছাড়াও অনেক উপকার করে।
হলুদে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ রয়েছে।
কাঁচা হলুদের অপকারিতা
কাঁচা হলুদ বহুদিন ধরে এর অনেক উপকারিতার জন্য ব্যবহার হয়। কারকিউমিন হল হলুদের প্রধান বায়োঅ্যাকটিভ উপাদান, এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার ব্যথা উপশম করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যাইহোক, যদিও হলুদ এবং কারকিউমিন সাধারণত খাওয়া নিরাপদ তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর হতে পারে। যেহেতু কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা দুই রয়েছে। নিচে এর অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক গুলো সম্পর্কে জানবো।
আরো পড়ুনঃ কি কি বিষয়ে উদ্যোক্তা হওয়া যায়
- কাঁচা হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে পেট খারাপ, গ্যাস, ডায়রিয়া, মাথা ঘোরা এবং মাথাব্যথা।
- কাঁচা হলুদ বেশি পরিমাণ খাওয়া মূত্রনালীর অক্সালেটের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারে, যা কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। একই ভাবে কিডনিতেও পাথর হতে পারে বেশি পরিমাণ হলুদ খাওয়ার ফলে।
- যেহেতু কাঁচা হলুদ রক্ত পাতলা করতে কাজ করে, তাহলে আপনার যদি রক্তপাতের সমস্যা থাকে তবে হলুদ এড়িয়ে চলা উচিত।
- কাঁচা হলুদ রক্ত পাতলা করে, এন্টিডিপ্রেসেন্টস, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিহিস্টামাইনস, কার্ডিয়াক ওষুধ এবং কেমোথেরাপি চিকিত্সা ওষুধ গুলোর সাথে বিক্রিয়া করে শরীরের ক্ষতি করতে পারে। আবার হলুদ ডায়াবেটিসের ওষুধের সাথেও বিক্রিয়া করতে পারে এবং এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে।
শেষ কথা
হলুদ কয়েক শতাব্দী ধরে বাংলাদেশ সহ এশিয়ার অনেক দেশে উজ্জ্বল হলুদ মশলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু শুধু তরকারি নয় কাঁচা হলুদে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা। হলুদে থাকা প্রধান উপাদান কারকিউমিন সবথেকে ভিটামিন বৈশিষ্ট্যযুক্ত। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা। সব কিছুরই ভালো এবং খারাপ দিক রয়েছে। তেমনই এই পোস্টে কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনা করেছি। আশা করি উপরের আলোচনা থেকে কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ২২৪৯৮
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url