OrdinaryITPostAd

তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক

তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিকও নেহায়েত কম নয়। আপনারা হয়তো তুলসী পাতার বহুবিধ উপকারিতা সম্পর্কে জানেন। কিন্তু তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিকও রয়েছে, যা আমাদের দেহের জন্য হুমকিস্বরূপ। আপনাদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে এই পোস্টে তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সাজিয়েছি। অতএব পোস্টটি এখনই পড়া শুরু করুন।
তুলসী পাতা ভেষজ চিকিৎসায় অধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু নিয়ম না মেনে তুলসী পাতা ব্যবহার করলে এটি আমাদের দেহের জন্য উপকারী হওয়ার বদলে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ হিসেবে সকলেরই তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। অতএব, আজকের এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে আপনারা তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক সম্বন্ধে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। আশা করি পোস্টটি আপনাদের যথেষ্ট কাজে দেবে। 

পোস্ট সূচিপত্র -তুলসী পাতার বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন  

তুলসী পাতা সম্বন্ধে ধারণা 

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সকলেই তুলসী গাছের সাথে সুপরিচিত। তুলসী পাতার বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন তুলসী গাছকে অন্যান্য গাছগুলো থেকে আলাদা করেছে। একটি তুলসী গাছ সাধারণত ২-৩ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। তুলসী গাছের কান্ড ও পাতায় এক ধরনের ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায়। তবে রাম তুলসীতে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়। সব তুলসী গাছ কিন্তু খাওয়ার উপযুক্ত নয়। সবুজ প্রকৃতির রাম তুলসী গুলো আপনারা খেতে পারেন। এতে এসিডিক উপাদান কিছুটা কম থাকে। 

অন্যথায় যেকোনো তুলসী গাছ থেকে পাতা ছিড়ে যদি আপনারা সেটি খেয়ে থাকেন তবে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার মুখে পতিত হতে পারে। অনেক তুলসী পাতায় বিষাক্ত উপাদান থাকে যা আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই তুলসী পাতা খাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম স্বাস্থ্যসম্মত একটি গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করতে হবে। আজকে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনারা তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক সমূহের সাথে পরিচিত হবেন। যেটি আপনার স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে ফলপ্রসু ভূমিকা পালন করবে। 

তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক 

তুলসী পাতার যে কেবল উপকারী দিকই রয়েছে তা কিন্তু নয়। ক্ষেত্র বিশেষে তুলসী পাতা বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকও প্রত্যক্ষ করা যায়। তুলসী পাতা খাওয়া ভালো কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণ তুলসী পাতা খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই আমাদের নিয়ম মোতাবেক তুলসী পাতা খাওয়া উচিত। এখন চলুন সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক কি কি রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা অর্জন করে ফেলি। 

  • অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে এটি রক্ত প্রবাহমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে রক্ত জমাট বাধার স্বাভাবিক প্রবণতা নষ্ট হয়। এমত অবস্থায় শরীরের কোন স্থান কেটে গেলে সেখানে ক্রমাগত রক্তপাত হয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে। 
  • গর্ভাবস্থায় তুলসী পাতা না খাওয়াই উত্তম। কেননা তুলসী পাতার অ্যাসিটিক ধর্ম আমাদের শরীরে নানা রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে সেটি মা ও সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য বিরূপ প্রভাব বয়ে নিয়ে আসতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় যথা সম্ভব তুলসী পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 
  • অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে। আর রক্ত পাতলা হয়ে গেলে রক্তের মাধ্যমে সকল পুষ্টি উপাদান সমগ্র দেহে পরিবহন বাধাগ্রস্থ হতে পারে। 
  • পটাশিয়াম এর কারনে নিম্ন রক্তপাতের সমস্যা দেখা দেয়। আর তুলসী পাতাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম অবস্থিত আছে। তাই যাদের নিম্ন রক্তচাপ জনিত সমস্যা রয়েছে তারা তুলসী পাতা পরিহার করতে পারে। 
  • তুলসী পাতা খেলে বেশিরভাগ সময়ই দাঁতের সমস্যা হতে দেখা দেয়। যারা নিয়মিত তুলসী পাতা খান তাদের দাঁতে এক ধরনের স্পট পড়ে, যা সার্বিকভাবে দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 
  • অনেক সময় তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে পেটের ভেতরে পাকস্থলী গরম হয়ে যায়। তখন পেট জ্বালাপোড়া করার মত অস্বস্তিকর সমস্যার উদ্ভব ঘটে। তাই পরিমিত পরিমাণে তুলসী পাতা খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত। আশা করি পোস্টের এই অংশ হতে আপনারা তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিকসমূহ বিস্তারিত জেনে ফেললেন।

তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া যে কারণে ক্ষতিকর

অনেকের কাছেই তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার পরামর্শ পেয়ে থাকবেন। কিন্তু তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে আমাদের ভয়াবহ রকমের ক্ষতি হতে পারে। তাই তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া যে কারণে ক্ষতিকর হতে পারে সে সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা অর্জন করুন। আমরা যদি তুলসী পাতা চিবিয়ে খায় তবে কি ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি সে সম্পর্কে নিচে কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হলো।
  • তুলসী পাতার প্রচুর পরিমাণে পারদ উপস্থিত থাকে, যেটি আপনার দাঁতে ক্ষয় ও দাগ সৃষ্টি করতে পারে। 
  • তুলসী পাতা এসিডিক প্রকৃতির হওয়ায় এটি মুখের কোমল ত্বকের জন্য অত্যন্ত মারাত্মক। সেজন্য সরাসরি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে মুখের ত্বকের একটি ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়। 
  • তুলসী পাতা দাঁতের এনামেল কে নষ্ট করে দিতে পারে। তাছাড়াও তুলসী পাতার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত পড়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে দেখা যায়। 
  • তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে সাধারণত এটি দাঁতের ফাঁকে লেগে যায়। পরবর্তীতে আমরা যদি দাঁতের ফাঁক থেকে তুলসীপাতার উচ্ছিষ্ট অংশ বের করতে না পারি তবে তা মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। 
  • হিন্দু ধর্ম শাস্ত্রে তুলসী পাতা চিবিয়ে না খেয়ে গিলে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 
  • তুলসী পাতায় প্রচুর পরিমাণ এসিড উপস্থিত রয়েছে যা সরাসরি পেটে গেলে আমাদের বদহজম, বমি সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে অনেক সময় গলা জ্বালাপোড়া করার মত সাময়িক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। 
  • অতএব দাঁত ও মুখের ত্বককে রক্ষা করার জন্য তুলসী পাতা না চিবিয়ে খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আপনারা যদি তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক এখনো না জেনে থাকেন তবে পোস্টের আগের অংশ পুনরায় পড়ে নিন। 

তুলসী যেভাবে খাবেন

তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে। আপনি সঠিক পদ্ধতিতে তুলসী পাতা গ্রহণ করলে এটি আপনার দেহের জন্য কোন ক্ষতির কারণ হবে না। তুলসী পাতা খাওয়া সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো, তুলসীর চা তৈরি করে সেটি পান করা। ফুটন্ত পানিতে ভালোভাবে চা তৈরি করে সেখানে তুলসী পাতা মিশিয়ে দিন। তারপর চা তৈরি করা হয়ে গেলে সেই তুলসী চা কিছু সময় পর পর পান করুন। তাছাড়া আপনারা তুলসী পাতা গুড়া করেও খেতে পারেন। 

তুলসী পাতা খাওয়ার আরো একটি কার্যকর পদ্ধতি হলো প্রত্যেক দিনের রান্নার তরকারিতে তুলসী পাতা মিশ্রিত করা। এতে করে আপনার খাবারের গুনাগুন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। মোটকথা হচ্ছে সরাসরি তুলসী পাতা চিবিয়ে না খেয়ে তা মধু অথবা দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। আশা করি পোস্টের এই অংশটি থেকে আপনারা তুলসী পাতা খাওয়ার আদর্শ পদ্ধতি শিখে ফেলেছেন। 

শেষ বার্তা

প্রিয় বন্ধুরা পরিশেষে একটি কথা আপনাদের বলতে চাই যে, আপনারা তুলসী পাতা চিবিয়ে না খেয়ে অবশ্যই অবশ্যই তুলসী পাতার চা তৈরি করে খান। তুলসী পাতার চা খেলে আপনাদের দেহে যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করে উঠবে। তাই পরিমিত পরিমাণে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। চাইলে তুলসী পাতার রস দুধের সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন। ভেষজ চিকিৎসার ব্যবহৃত তুলসী পাতার ঔষধ গুলোও আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। 

রাতের নাগালে যাতে তুলসী পাতা পান সে সুবিধা নেওয়ার জন্য বাড়ির আশেপাশে উপযুক্ত স্থানে তুলসী গাছের চারা রোপন করতে পারেন। সর্বোপরি এই পোস্টটি পড়ে আপনারা তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে নিয়েছেন। তুলসী পাতা ক্ষতিকর দিকগুলো সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন। দৈনন্দিন জীবনের দরকারি নানা স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এতক্ষণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Robiul
    Robiul 16 October 2023 at 13:13

    Thanks your information

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url